১৯৬৫ থেকে ২০১৭ এই দীর্ঘ ৫৩ বছর চেরাডাঙ্গী কলেজ থেকে শুরু করে বর্তমানের কেবিএম কলেজ – এই দীর্ঘ উত্তরনের ইতিহাস কেবিএম কলেজের পর্যায়ক্রমিক অগ্রগতির ইতিহাস । অধ্যক্ষ মাহমুদ মোকাররম হসেনের যোগ্য নেতৃত্ব এবং শিক্ষক বৃন্দের অবিরাম প্রচেষ্টা, স্থানীয় এবং শহরের গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের সুকামনা এবং প্রবাহমান ছাত্র-ছাত্রীদের সহযোগীতায় কেবিএম কলেজ আজ দেশের একটি সুপরিচিত বৃহৎ বেসরকারী ডিগ্রী কলেজ । শুরু থেকেই কলেজে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান, মানবিক এবং বানিজ্য শ্রেণী পুর্ণাংগভাবে চালু করা হয়। প্রকাশ থাকে যে দিনাজপুরে সর্বপ্রথম কেবিএম কলেজে বিএসসি ডিগ্রী পড়ানোর কাজ শুরু করা হয়()। পরবর্তীতে ১৯৯৪-৯৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে কলেজে উচ্চমাধ্যমিক মানবিক শ্রেণীতে বাংলা, ইংরেজী, ইসলামের ইতিহাস, অর্থনিতী, পৌরনিতী, কৃষি বিজ্ঞান ও সমাজ বিজ্ঞান বিষয়, বানিজ্য শ্রেণীতে সকল বিষয় এবং বিজ্ঞান শ্রেণীতে পদার্থ, রসায়ন, জীব বিজ্ঞান, গনিত, আইসিটি এবং কৃষি শিক্ষা বিষয়ে পাঠ গ্রহনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

সমাজবিজ্ঞানী জনাব মোঃ হাসানুজ্জামান বিএম কোর্স-সমন্বয়কারী
প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মাহমুদ মোকাররম হোসেনের অবদান হিসাবে উত্তর বঙ্গে সর্বপ্রথম ১৯৯৬ সালে কেবিএম কলেজে কারিগরী বর্ডের আন্ডারে পরিচালিত বিএম শাখার পাঠদান শুরু করা হয় । প্রথমে কম্পিউটার অপারেশন ও সেক্রেটারিয়াল সাইন্স এই দুইটি ট্রেডে ২০ জন করে শিক্ষার্থীর অনুমোদন নিয়ে আসা হয় । প্রথম অবস্থায় ৭ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে শিক্ষা কার্জক্রম শুরু করা হয় । অত্র বিএম শাখার সমন্বয়কারী জনাব জিয়াউলহুদা সাহেবের নিরলশ পরিশ্রম ও বিজ্ঞ পরিচালনায় পরবর্তীকালে এক সময় এই বিএম শাখা কলেজের এক বিশেষ শাখ হিসাবে ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকাবাসির দৃষ্টি আকর্শন করে । ফলে এই শাখায় ভর্তি হওয়া ও লেখাপড়া করা ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করে । কেবিএম কলেজ বিএম শাখা হতে উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করার সুযোগ নিয়ে কর্মজীবনে চরম সার্থকতা পাওয়ার নজির আছে । ২০০০ সালে বিএম শাখায় আরও একটি ট্রেড (হিসাব রক্ষণ ) সংযোজন হয়ে প্রতি ট্রেডে ২৫ জন করে মোট তিনটি ট্রেডে ৭৫ জন ছাত্র-ছাত্রী লেখাপড়া করার সুযোগ পায় । ২০০২ সালে বিএম শাখায় আরও একটি ট্রেড (ব্যাংকিং ) সংযোজন হয়ে প্রতি ট্রেডে ৩০ জন করে মোট চারটি ট্রেডে ১২০ জন ছাত্র-ছাত্রী লেখাপড়া করার সুযোগ পায় ।

জনাব আব্দুল হাই সিদ্দিকী কৃষি ডিপ্লোমা কোর্স-সমন্বয়কারী
কৃষি প্রধান বাংলাদেশ, কৃষির অগ্রযাত্রা বজায় রাখার প্রত্যয় জ্ঞ্যাপন করে উত্তর বঙ্গে সর্বপ্রথম ২০০৫ সালে কেবিএম কলেজে কারিগরী বর্ডের আন্ডারে পরিচালিত কৃষি ডিপ্লমা শাখার পাঠদান শুরু করা হয় । প্রথম অবস্থায় ৬০ জন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির অনুমোদন নিয়ে এই শাখার পাঠদান শুরু করা হয় । কৃষি ডিপ্লমা শাখার সমন্বয়কারী জনাব আব্দুল হাই সিদ্দিকী সাহেবের নিরলশ পরিশ্রম ও বিচক্ষন পরিচালনায় পরবর্তীকালে এক সময় এই কৃষি ডিপ্লমা শাখা কলেজের এক বিশিষ্ট শাখ হিসাবে ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকাবাসির মনে স্থান করে নেয় । এই শাখায় লেখাপড়া করে অনেকে সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে কর্মসংস্থান অর্জন করেছে । ২০০৯ সালে কৃষি ডিপ্লমা শখায় ১২০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি নিয়ে শিক্ষার কার্জক্রম বহালতবিয়তে চলছে ।

বর্তমান বিজ্ঞান ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয় ১৯৬৯-৭০ সালে, সরকারী উন্নয়ন স্কীমের অর্থে ডিপি আই-এর মাধ্যমে। সবাধীনতার পর ১৯৭২ সালে আরডি আর এস এবং রাজশাহী বিভাগ উন্নয়ন বোর্ডের অর্থানুকুলে বিজ্ঞান ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। পদার্থ, রসায়ন এবং উদ্ভীদ বিজ্ঞানাগারের স্থান সংকুলান হয় সেখানে। ১৯৭০ সালে দিনাজপুরে সর্বপ্রথম কেবিএম কলেজে বিএসসি ডিগ্রী পড়ানোর কাজ শুরু করা হয়। তৎকালীন দিনাজপুর সরকারী কলেজেও বিএসসি ডিগ্রী পড়ানো হত না। কেবিএম কলেজকে দিনাজপুরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির বিজ্ঞান শিক্ষার অগ্রদুত হিসাবে বিবেচনা করা হয়। বর্তমানে স্নাতক বি বি এস এবং বি এস এস স্রেণী সমুহে বাংলা, ইংরেজী, ইসলামের ইতিহাস, অর্থনিতী, রাষ্ট্র বিজ্ঞান ও সমাজ বিজ্ঞান বিষয়, বানিজ্য শ্রেণীতে সকল বিষয় এবং বিজ্ঞান শ্রেণীতে পদার্থ, রসায়ন, জীব বিজ্ঞান এবং গনিত বিষয়ে পাঠ গ্রহনের সুবিধা আছে ।
২০১১-২০১২ শিক্ষাবর্ষে পরীক্ষামূলকভাবে এই কলেজে সমাজ বিজ্ঞান, উদ্ভীদ বিদ্যা এবং প্রাণী বিদ্যা বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু করা হয়। বিষয়গুলির ১ম ও ২য় বর্ষের উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় ফলাফল, এলাকাবাসির চাহিদা এবং ছাত্র-ছাত্রীদের আগ্রহের তাড়নায় কলেজ প্রশাসন ও পরিচালনা পর্ষদের সহযোগিতায় পরবর্তীকালে আরও সাতটি বিষয়ে যথা বাংলা, ইংরেজী, ইসলামের ইতিহাস, অর্থনিতী, রাষ্ট্র বিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স কোর্স নিয়ে আসা হয়। কলেজে এখন বি বি এ সহ মোট ১১টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু আছে । প্রথমে প্রতিটি বিষয়ে ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তীর অনুমতি থাকলেও এখন তা বর্দ্ধিত হয়ে ১০০ জনে উন্নীত হয়েছে। ফলে বিশাল কলেজ ক্যাম্পাস গম গম করছে ছাত্র-ছাত্রীদের আনা-গোনায়। আগামীতে পদার্থ, রসায়ন ও গনিত বিষয়ে অনার্স কোর্স নিয়ে আসার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে ।

জনাব ফসিয়ার রহমান বিবিএ কোর্স-সমন্নয়কারী
উত্তরবঙ্গে সর্বপ্রথম বি, বি, এ কোর্স চালু করাহয় কেবিএম কলেজে । তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি জনাব ভারোতীনন্দী সরকার –এর নিরলস পরিশ্রমের ফসল হিসাবে এই কোর্স কেবিএম কলেজে সোভা পায়। কলেজে ক্লাসরুমের সল্পতা দেখা দিলে তিনি অল্পদিনের মধ্যে এই ভবনের বরাদ্য নিয়ে আসেন এবং তা বাস্তবায়ন করেন(২০০০ সাল)।